ট্রাম্পের চাপ না মেনেই সুদের হার কমানোর পক্ষে ওয়ালার

ট্রাম্প প্রশাসনের চাপের কাছে নতি স্বীকার না করেই সুদের হার কমানোর পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন ক্রিস্টোফার ওয়ালার। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) পরবর্তী চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে আলোচিত নাম এই ওয়ালারই।

Oct 23, 2025 - 15:37
ট্রাম্পের চাপ না মেনেই সুদের হার কমানোর পক্ষে ওয়ালার
ফেডে স্বাধীন নীতি বজায় রাখার পক্ষে ক্রিস্টোফার ওয়ালার। ছবি: ব্লুমবার্গ

ট্রাম্প প্রশাসনের চাপের কাছে নতি স্বীকার না করেই সুদের হার কমানোর পক্ষে সমর্থন জানিয়েছেন ক্রিস্টোফার ওয়ালার। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) পরবর্তী চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে সবচেয়ে আলোচিত নাম এই ওয়ালারই।

ফেডারেল রিজার্ভ কর্মকর্তারা গত মাসে যখন বৈঠকে বসেছিলেন, তখন বিনিয়োগকারীরা ধরেই নিয়েছিলেন যে, ২০২৫ সালে প্রথম সুদের হার কমানো হবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি নতুন নিয়োগ পাওয়া গভর্নর স্টিফেন মিরান সেখানে অর্ধ শতাংশ কমানোর পক্ষে ভোট দেন। কিন্তু ওয়ালার তার সঙ্গে না গিয়ে অধিকাংশ সদস্যের মতো এক-চতুর্থাংশ হ্রাসের পক্ষে ভোট দেন।

দীর্ঘদিন ধরেই ওয়ালার ধীরে ধীরে সুদের হার কমানোর পক্ষে ছিলেন। তাঁর বক্তব্য, ‘নীতিনির্ধারণে আমাদের সবার কিছুটা আপস করতে হয় যাতে বাজার জনগণের কাছে বার্তা পরিষ্কার থাকে।

সাবেক অর্থনীতির অধ্যাপক ওয়ালার স্বাধীন মুদ্রানীতি তথ্যনির্ভর বিশ্লেষণের জন্যও পরিচিত। তাকে নিয়ে সহকর্মীদের মূল্যায়ন, ব্যক্তিগত উচ্চাকাঙ্ক্ষা বা রাজনৈতিক সুবিধার জন্য তিনি নিজের অবস্থান বদলান না।

ওয়ালারকে ঘিরেই এখন আলোচনা তুঙ্গে, কারণ ট্রাম্প শুধু নতুন চেয়ারম্যানই খুঁজছেন না, তিনি ফেডের ওপর রাজনৈতিক প্রভাব বাড়ানোরও চেষ্টা করছেন। বিশ্লেষকদের আশঙ্কা, এই স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি বৈশ্বিক বাজার উভয়ই ঝুঁকিতে পড়বে।

ওয়ালার অবশ্য ফেডের কাঠামোগত সংস্কারে আগ্রহী, তবে তিনি প্রতিষ্ঠানের স্বাধীনতা রক্ষায় অনড়। নীতিগত দিক থেকে ওয়ালার সুদের হার কমানোর পক্ষে থাকলেও তাঁর অবস্থান বিশ্লেষণভিত্তিক। ট্রাম্পের আরোপিত আমদানি শুল্ক সাময়িকভাবে মূল্যবৃদ্ধি ঘটালেও তা দীর্ঘমেয়াদি মুদ্রাস্ফীতির ঝুঁকি তৈরি করবে নাএমন ধারণা থেকেই তিনি সুদ কমানোর পক্ষে।

২০২২ সালে যখন অনেকেই সন্দিহান ছিলেন, তখন ওয়ালার যুক্তি দেন যে কর্মসংস্থান না বাড়িয়েও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব, পরবর্তীতে তার কথাই সঠিক প্রমাণিত হয়েছে।

ওয়ালার বরাবরই ফেডের রাজনৈতিক নিরপেক্ষতার পক্ষে। সম্প্রতি তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘যদি রাজনৈতিকভাবে সুবিধাজনক ব্যক্তিকে চেয়ারম্যান করা হয়, তাহলে সুদের হার কমবে না, উল্টো বাড়বে।’

এমন অবস্থানে দাঁড়িয়ে ওয়ালার এখন ফেড নেতৃত্বের দৌড়ে অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, তিনি চেয়ারম্যান হলে ট্রাম্পের চাপের মুখেও ফেডের স্বাধীনতা বজায় রাখার চেষ্টা করে যাবেন।

তথ্যসূত্র: ব্লুমবার্গ