যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার শর্টকাট, এক মিলিয়ন ডলারে “গোল্ড কার্ড” ভিসা

যুক্তরাষ্ট্রে দ্রুত অভিবাসন ভিসা পেতে কমপক্ষে এক মিলিয়ন ডলার দিলেই মিলবে ‘গোল্ড কার্ড’। গত শুক্রবার এক নির্বাহী আদেশে এ ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একে অনেকে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার "শর্টকাট" হিসেবে দেখছেন। 

Sep 21, 2025 - 07:57
যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার শর্টকাট, এক মিলিয়ন ডলারে “গোল্ড কার্ড” ভিসা

যুক্তরাষ্ট্রে দ্রুত অভিবাসন ভিসা পেতে কমপক্ষে এক মিলিয়ন ডলার দিলেই মিলবে ‘গোল্ড কার্ড’। গত শুক্রবার এক নির্বাহী আদেশে এ ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একে অনেকে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা হওয়ার "শর্টকাট" হিসেবে দেখছেন। 

সরকারি ওয়েবসাইটে প্রদর্শিত বিজ্ঞাপনে লেখা আছে: “দ্য ট্রাম্প গোল্ড কার্ড ইজ হিয়ার”। সেখানে একটি সোনালী কার্ডের ছবি দেখানো হয়েছে, যেখানে ট্রাম্পের ছবি, স্বাক্ষর, মার্কিন ঈগল এবং স্ট্যাচু অব লিবার্টির প্রতীক রয়েছে। স্লোগান: “Unlock life in America”

নতুন এই গোল্ড কার্ড প্রোগ্রামের আওতায়, বিদেশিরা যদি কমপক্ষে এক মিলিয়ন ডলার মার্কিন বাণিজ্য দপ্তরে “উপহার” দেন, তবে তারা দ্রুত ভিসা প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা (গ্রিন কার্ডধারী) হতে পারবেন। কর্পোরেশনগুলো চাইলে কমপক্ষে দুই মিলিয়ন ডলার দিয়ে বিদেশিদের জন্য এই কার্ড স্পনসর করতে পারবে।

বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে ৮০ হাজার গোল্ড কার্ড দেওয়া হবে। তবে এখনো বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া চলছে। ভিসা অনুমোদনের আগে আবেদনকারীদের স্টেট ডিপার্টমেন্ট এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটির যাচাই পেরোতে হবে এবং ১৫ হাজার ডলার "ভেটিং ফি" দিতে হবে।

লুটনিক আরও জানান, এই গোল্ড কার্ড বর্তমানের EB-1 এবং EB-2 ভিসার জায়গা নেবে, যা সাধারণত অসাধারণ দক্ষতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের দেওয়া হতো। তার ভাষায়: “যে ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রকে এক মিলিয়ন ডলার দান করতে সক্ষম, তাকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য মূল্যবান ব্যক্তি হিসেবে ধরা যায়।”

তিনি আরও যোগ করেন: “এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে অন্যান্য গ্রিন কার্ড ভিসা বিভাগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে, আর এই মডেল হবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের প্রধান পথ।”

এছাড়া সরকার বিবেচনা করছে “প্লাটিনাম কার্ড” চালু করার, যার জন্য ৫ মিলিয়ন ডলার দিতে হবে। এতে ধারকরা বছরে ২৭০ দিন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করতে পারবেন এবং বিদেশি আয়ের উপর কর দিতে হবে না। তবে এই কার্ড নাগরিকত্বের পথ খুলবে না এবং এটি চালু করতে কংগ্রেসের অনুমোদন প্রয়োজন।

একই দিনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আরেকটি নির্বাহী আদেশে এইচ-১বি ভিসার জন্য অতিরিক্ত ১ লাখ ডলার ফি আরোপ করেছেন। এই ভিসার মাধ্যমে বিদেশিরা সর্বোচ্চ ছয় বছর পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করতে পারেন।

এই পরিবর্তনকে অনেকে কঠোর পদক্ষেপ হিসেবে দেখছেন। সমালোচকদের মতে, এইচ-১বি ভিসা ব্যবহারে মার্কিন কর্মীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন, কারণ বিদেশিরা তুলনামূলক কম বেতনে কাজ করতে রাজি হন। তবে সমর্থকদের মতে, প্রযুক্তি খাতে দক্ষ জনবল ঘাটতি পূরণে এই ভিসা অপরিহার্য। অ্যামাজনের মতো কোম্পানি প্রতিবছর হাজার হাজার H-1B আবেদন করে থাকে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মতে, প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো নতুন ফি নিয়ে সন্তুষ্ট থাকবে। তিনি বলেন, "এই নীতির ফলে যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষ ও উৎপাদনশীল জনশক্তি ধরে রাখা সম্ভব হবে এবং প্রতিষ্ঠানগুলো অতিরিক্ত ব্যয় সত্ত্বেও এটিকে ইতিবাচকভাবে নেবে।" 

সূত্র: সিবিএস নিউজ