রাশিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর তেলের বিশ্ববাজারে আগুন

রাশিয়ার প্রধান তেল কোম্পানিগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়ে গেছে। বুধবার ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ৫ শতাংশের বেশি বেড়ে ব্যারেল প্রতি প্রায় ৬৬ ডলারে পৌঁছায়। যা জুনে ইসরায়েল-ইরান সংঘাত শুরুর পর এক দিনে সবচেয়ে বড় বৃদ্ধি।

Oct 23, 2025 - 14:47
রাশিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর তেলের বিশ্ববাজারে আগুন
রাশিয়ার দুই তেল কোম্পানি রসনেফট এবং লুকয়েলকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কালো তালিকাভুক্তির পর বিশ্ববাজরে তেলের দাম বেড়েছে। ছবি: ব্লুমবার্গ

রাশিয়ার প্রধান তেল কোম্পানিগুলোর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নতুন নিষেধাজ্ঞা ঘোষণার পর আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়ে গেছে। বুধবার ব্রেন্ট ক্রুডের দাম শতাংশের বেশি বেড়ে ব্যারেল প্রতি প্রায় ৬৬ ডলারে পৌঁছায়। যা জুনে ইসরায়েল-ইরান সংঘাত শুরুর পর এক দিনে সবচেয়ে বড় বৃদ্ধি।

রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি রসনেফট এবং বেসরকারি কোম্পানি লুকয়েলকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে ওয়াশিংটন। এতে ভারতের মতো প্রধান ক্রেতারা রাশিয়ার সঙ্গে লেনদেন বন্ধ করে দিতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

বিশ্ববাজারে এই পদক্ষেপ এসেছে এমন সময়ে, যখন তেলের সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলেও চাহিদা কমার ইঙ্গিত মিলছে। ভারত যদি রাশিয়া থেকে তেল কেনা কমায়, তাহলে প্রশ্ন উঠছেচীন কি সেই ঘাটতি পূরণে এগিয়ে আসবে?

রিস্ট্যাড এনার্জির ভূরাজনৈতিক বিশ্লেষক হোর্হে লিওন বলেন, ‘রাশিয়ার সবচেয়ে বড় তেল উৎপাদকদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞা ওয়াশিংটনের চাপের কূটনৈতিক অভিযানকে নতুন পর্যায়ে নিয়ে গেল। এতে রাশিয়ার তেল উৎপাদন রপ্তানিতে বড় প্রভাব ফেলার ঝুঁকি তৈরি হয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নও রাশিয়ার ওপর নতুন করে চাপ বাড়িয়েছে, জ্বালানি অবকাঠামোকে লক্ষ্য করে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর মধ্যে রসনেফট গ্যাজপ্রমনেফটের সঙ্গে সব ধরনের লেনদেন নিষিদ্ধ করা হয়েছে তারা।।

তবে বাজারে সরবরাহ এখনো উদ্বৃত্ত। আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার হিসেবে, আগামী বছর বিশ্বে দৈনিক সরবরাহ চাহিদার চেয়ে প্রায় মিলিয়ন ব্যারেল বেশি হতে পারে। তবুও এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাব হালকাভাবে নেওয়ার সুযোগ নেই, কারণ ভারতের তেল আমদানির এক-তৃতীয়াংশই আসে রাশিয়া থেকে।

চীনও রাশিয়া থেকে প্রায় ২০ শতাংশ অপরিশোধিত তেল আমদানি করে, ফলে নিষেধাজ্ঞার ধাক্কা তাদের বাজারেও পড়তে পারে।

আইএনজি ব্যাংকের পণ্য বিশ্লেষক ওয়ারেন প্যাটারসন বলেন, ‘এই নিষেধাজ্ঞা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের রাশিয়া-নীতি পাল্টে দিয়েছে এবং ভবিষ্যতে আরও কঠোর পদক্ষেপের পথ খুলে দিয়েছে। তবে এই নিষেধাজ্ঞা কতটা কার্যকর হবে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি আগামী সপ্তাহে দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠকে রাশিয়ার তেল কেনা নিয়ে আলোচনা করবেন।

রাশিয়ার রসনেফট লুকয়েল দেশটির মোট তেল রপ্তানির প্রায় অর্ধেক সরবরাহ করে, যা রুশ বাজেটের বড় রাজস্বের উৎস। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন পদক্ষেপ রাশিয়ার রাজস্বে বড় আঘাত হানতে পারে বলেই আশঙ্কা বিশ্লেষকদের।

তথ্যসূত্র: ব্লুমবার্গ