ধারণক্ষমতার বেশি বন্দি, আইসিই শিবিরে খাবারের মান নিয়ে উদ্বেগ
ট্রাম্প প্রশাসন যখন যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অভিবাসন গ্রেপ্তার বাড়াচ্ছে, তখন অন্তত সাতটি অঙ্গরাজ্যের অভিবাসী আটককেন্দ্রে আটক ব্যক্তিরা ক্ষুধা, খাবারের ঘাটতি এবং পচা খাবার সম্পর্কে অভিযোগ তুলেছেন। আটক ব্যক্তি ও অধিকারকর্মীরা জানিয়েছেন, কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, আবার কেউ কেউ ওজন হারিয়েছেন। একটি কেন্দ্রে খাবার ঘিরে উত্তেজনাও তৈরি হয়েছিল।

ট্রাম্প প্রশাসন যখন যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে অভিবাসন গ্রেপ্তার বাড়াচ্ছে, তখন অন্তত সাতটি অঙ্গরাজ্যের অভিবাসী আটককেন্দ্রে আটক ব্যক্তিরা ক্ষুধা, খাবারের ঘাটতি এবং পচা খাবার সম্পর্কে অভিযোগ তুলেছেন। আটক ব্যক্তি ও অধিকারকর্মীরা জানিয়েছেন, কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, আবার কেউ কেউ ওজন হারিয়েছেন। একটি কেন্দ্রে খাবার ঘিরে উত্তেজনাও তৈরি হয়েছিল।
এই খাবারের সমস্যাগুলো দেখা দিয়েছে এমন সময়ে, যখন আইসিই (ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট) কেন্দ্রগুলোতে ধারণক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ রাখা হচ্ছে। জুন মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত আইসিই প্রায় ৬০,০০০ অভিবাসীকে আটকে রেখেছে, যা কংগ্রেস নির্ধারিত সক্ষমতার চেয়ে প্রায় ৪৫% বেশি।
যদিও আইসিই-এর অনেক কেন্দ্রই বেসরকারি কোম্পানির মাধ্যমে পরিচালিত। সমস্যা দেখা দিচ্ছে সারা দেশজুড়ে তা পরিচালনাকারী যেই হোক না কেন। এক সাবেক আইসিই কর্মকর্তা বলেন, প্রতিদিন অনির্ধারিত নতুন আটক আসার কারণে অনেক সময় যথাযথ পরিমাণে খাবার মজুদ রাখা কঠিন হয়ে পড়ে, ফলে খাবার দেরিতে দেওয়া হয় বা অল্প দেওয়া হয়।
তার ওপরে হোমল্যান্ড সিকিউরিটির আওতাধীন স্বাধীন পর্যবেক্ষণ দপ্তরটির কর্মী ছাঁটাইয়ের কারণে আটক ব্যক্তিদের অভিযোগ জানানোর পথ আরও সংকুচিত হয়ে গেছে।
রুবিমার নামে এক ভেনেজুয়েলান নারীবলেন, তার স্বামী হোসে টেক্সাসের এল পাসোতে প্রায় তিন মাস আটক ছিলেন। তাকে মাত্র দুই চামচ ভাত দেওয়া হতো এবং অধিকাংশ সময় তিনি ক্ষুধার্ত থাকতেন।
ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যে লা রেসিসতেনসিয়া নামের এক অভিবাসী অধিকার সংগঠনের লিলিয়ানা চুমপিতাসি বলেন, তিনি প্রতিদিন ১০ থেকে ২০টি ফোনকল পান যেগুলোতে খাবারের অনিয়ম, অর্ধেক পরিমাণ খাবার, দেরিতে সরবরাহসহ নানা অভিযোগ করা হয়।
আইসিই-এর মানদণ্ড অনুযায়ী, প্রতিদিন তিনবেলা খাবার সরবরাহ করার কথা। যার মধ্যে অন্তত দুটি গরম খাবার হবে এবং রাতের খাবার ও সকালের নাশতার মধ্যে ১৪ ঘণ্টার বেশি বিরতি হবে না।
কংগ্রেস ৪১,৫০০ জনকে আটক রাখার জন্য অর্থ বরাদ্দ করলেও জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে আইসিই ৫৭,০০০ জনকে আটকে রেখেছে।
তবে নতুন বাজেটে ট্রাম্পের 'ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল' পাস হওয়ায় আইসিই ২০২৯ সাল পর্যন্ত ৪৫ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ পাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, বছরে ১১৬,০০০ পর্যন্ত বেডের ব্যবস্থা করা যাবে।
ওয়াশিংটনের টাকোমার একটি আটক কেন্দ্রে এক সকালে ৫৭ জন বন্দি খাবার খাওয়ার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তদন্তে জানা যায়, সেদিন পরিবেশিত সবজিতে ব্যাসিলাস সিরিয়াস নামের একটি বিষাক্ত ব্যাকটেরিয়া ছিল, যা সাধারণত সঠিকভাবে ঠান্ডা না করা বা পুনঃতাপ দেওয়া খাবারে জন্ম নেয়।
আইসিই দাবি করেছে, খাবার নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং ডায়েটিশিয়ান কর্তৃক অনুমোদিত হয়। তবে একাধিক আইনজীবী ও অধিকারকর্মী বলছেন, বাস্তবে অভিযোগের সাড়া মিলছে না। ডিএইচএসের অভ্যন্তরীণ পর্যবেক্ষণ সংস্থার কর্মীদের ছাঁটাইয়ের ফলে বন্দিদের অভিযোগের পথ কমে গেছে।
এ বিষয়ে ডিএইচএস মুখপাত্র ট্রিসিয়া ম্যাকলাফলিন জানান, সব অভিযোগ মিথ্যা এবং সব বন্দিকে যথাযথ খাবার ও চিকিৎসাসেবা দেওয়া হয়।
সূত্র: এনবিসি-ফাইভ