প্রবাসে চট্টগ্রামের ঐতিহ্য, ডালাসে অনুষ্ঠিত হলো বিশাল মেজবান উৎসব
ডালাস–ফোর্ট ওয়ার্থ চাটগাইয়া কমিউনিটি দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজন করেছে তাদের বহুল প্রতীক্ষিত চাটগাইয়া মেজবান, যেখানে কয়েক হাজার মানুষ একসঙ্গে মিলিত হয়ে উপভোগ করেছেন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আপ্যায়ন।
ডালাস–ফোর্ট ওয়ার্থ চাটগাইয়া কমিউনিটি দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজন করেছে তাদের বহুল প্রতীক্ষিত চাটগাইয়া মেজবান, যেখানে কয়েক হাজার মানুষ একসঙ্গে মিলিত হয়ে উপভোগ করেছেন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী আপ্যায়ন।
গত ১৪ নভেম্বর গ্র্যান্ড সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই বৃহৎ আয়োজনে অংশ নেন ডিএফডব্লিউতে বসবাসরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা, যাদের জন্য মেজবানের সব খাবার ছিল সম্পূর্ণ ফ্রি এবং সবার জন্য উন্মুক্ত। কোনোরকম আরএসভিপি বা টিকিট ছাড়াই যে কেউ এসে খেতে পারেন এই আয়োজনে। এই ঐতিহ্যই চট্টগ্রামের মেজবানকে বিশেষ করে তোলে।
মেজবানে পরিবেশন করা হয় দুটি আইটেম—অথেনটিক চাটগাঁইয়া স্টাইলে রান্না করা গরুর মাংস এবং বুটের ডালের সাথে গরুর মাংস। মূল মশলা আনা হয় চট্টগ্রামের হাটহাজারী থেকে, আর গরু কেনা হয় স্থানীয় একটি র্যাঞ্চ থেকে। দুইটি গরু জবাই করে প্রায় ১ হাজার ৫০০ পাউন্ড বা ৭০০ কেজি মাংস প্রস্তুত করা হয়, যা আনুমানিক তিন হাজার মানুষের জন্য যথেষ্ট ছিল। আয়োজনের দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবকরা জানান, তারা চাইছিলেন যেন প্রবাসে থেকেও অতিথিদের কাছে বাংলাদেশী ঐতিহ্যের আসল স্বাদ পৌঁছে দিতে পারেন।
গত বছরের তুলনায় এবারের মেজবানে ছিল আরও বেশি শৃঙ্খলা, পরিকল্পনা ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা। বড় ভেন্যু, আলাদা লাইনে খাবার সার্ভ, তিনটি স্টেশন, ডাইনিং হল ও বাইরের বসার জায়গা মিলে কয়েকশো মানুষের জন্য একসঙ্গে খাবার পরিবেশন করা হয়। অতিথিরা প্রথমে অডিটোরিয়ামে সাংস্কৃতিক আয়োজন উপভোগ করেন এবং পরে ব্যাচ ধরে সবাইকে ডাইনিং হলে প্রবেশ করানো হয়। এভাবে ব্যাচ ধরে পরিবেশন চলায় কোনো ধাক্কাধাক্কি বা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়নি, যা উপস্থিত অনেকের প্রশংসা কুড়ায়। গত বছরের তুলনায় এবারের খাবারের স্বাদ, মাংসের মান এবং সার্ভিস নিয়ে অতিথিরা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।
চট্টগ্রামের মানুষের ঐতিহ্যিক অতিথিপরায়ণতা প্রবাসে থেকেও ধরে রাখা ছিল আয়োজনের মূল লক্ষ্য। আয়োজকদের মতে, মেজবান শুধু একটি খাবারের অনুষ্ঠান নয়, বরং এটি কমিউনিটিকে একত্রিত করার একটি উৎসব। তারা জানান, এত বড় আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন করতে পারা তাদের জন্য গর্বের, এবং আগামী বছর আরও বড় পরিসরে চাটগাঁইয়া মেজবান আয়োজনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।