ডালাস স্টারসের নতুন ঘর কি প্ল্যানো
ডালাস মাভেরিকসের সঙ্গে একই ছাদের নিচে বসবাসে যেন ক্লান্ত হয়ে পড়েছে ডালাস স্টারস। আমেরিকান এয়ারলাইনস সেন্টার নিয়ে দুই দলের বিরোধ এখন শহর ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে উপশহর প্ল্যানোতেও। এনএইচএল দলটি সেখানে নতুন অ্যারেনা গড়ার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে।
ডালাস মাভেরিকসের সঙ্গে একই ছাদের নিচে বসবাসে যেন ক্লান্ত হয়ে পড়েছে ডালাস স্টারস। আমেরিকান এয়ারলাইনস সেন্টার নিয়ে দুই দলের বিরোধ এখন শহর ছাড়িয়ে পৌঁছে গেছে উপশহর প্ল্যানোতেও। এনএইচএল দলটি সেখানে নতুন অ্যারেনা গড়ার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছে।
একসময়ের স্বপ্ন উইলো বেন্ডের পুনর্গঠনের লড়াই
প্ল্যানোর ওয়েস্ট পার্ক বুলেভার্ডে অবস্থিত দ্য শপস অ্যাট উইলো বেন্ড ২০০১ সালে চালু হয়েছিল টেক্সাসের শেষ ইনডোর মল হিসেবে। ১.৪ মিলিয়ন বর্গফুটের এই মল একসময় উত্তর টেক্সাসের কেনাকাটার কেন্দ্রবিন্দু হলেও ক্রেতা ও ভাড়াটিয়া হারিয়ে বহুদিন ধরেই সংগ্রাম করে চলছে এই ইনডোর মল।
গত কয়েক বছর ধরে চলছে পুনর্গঠনের উদ্যোগ—কম খুচরা দোকান রেখে মিশ্র ব্যবহারের উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে। এর মধ্যে নিম্যান মার্কাস ডিপার্টমেন্টাল স্টোরিটি ২০২৭ সালের শুরুতে বন্ধ হয়ে যাবে। আর মেসিস তো বছরের শুরুতেই মল থেকে সরিয়ে নিয়েছে নিজেদের।
এই জমির আয়তন ১০৭ একর, যা স্টারস প্রেসিডেন্ট ব্র্যাড অ্যালবার্টসের কাঙ্ক্ষিত ৭৫ একর ন্যূনতম জায়গার চেয়েও বেশি।
উইলো বেন্ডে পৌঁছানো যায় ডালাস নর্থ টোলওয়ে এবং ওয়েস্ট পার্ক বুলেভার্ড দিয়ে। এটি ডালাস এরিয়া র্যাপিড ট্রানজিটের (ডার্ট) বাস রুটের অংশও। তবে শিগগিরই প্ল্যানো সিটি কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তারা ডার্ট থেকে বেরিয়ে আসবে কি না—এ নিয়ে ভোট আয়োজনের চিন্তাও চলছে।
যদিও সম্প্রতি চালু হওয়া ডার্ট সিলভার লাইন উত্তর ডালাসের সাতটি শহরকে ডিএফডব্লিউ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সঙ্গে যুক্ত করেছে।
উইলো বেন্ডের বর্তমান মালিক তিনটি কোম্পানি—ডালাসভিত্তিক কাওলি পার্টনারস ও সেন্টেনিয়াল, এবং নিউইয়র্কভিত্তিক ওয়াটারফল অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট। তারা ২০২২ সালে সম্পত্তিটি কেনে। এর আগে মালিক ছিল মায়ামিভিত্তিক স্টারউড ক্যাপিটাল গ্রুপ। তবে সম্ভাব্য অ্যারেনা প্রকল্প নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চায়নি এই তিন প্রতিষ্ঠান।
ডালাসের প্রায় ২০ মাইল উত্তরে অবস্থিত প্ল্যানো, যেখানে ইতিমধ্যে সদর দপ্তর বা আঞ্চলিক অফিস স্থাপন করেছে জেপি মরগান চেজ, ক্যাপিটাল ওয়ান, টয়োটা, পেপসিকোসহ একাধিক করপোরেশন। এমনকি এটিঅ্যান্ডটিও ডালাস ডাউনটাউন থেকে এখানে আসার কথা ভাবছে।
প্রায় তিন লাখ মানুষের এই শহরে পরিবারের গড় আয় ১ লাখ ৪৮ হাজার ডলার, যা ডালাস–ফোর্ট ওর্থ ও টেক্সাসের গড়ের চেয়ে অনেক বেশি।
প্ল্যানো সিটি মুখপাত্র অ্যামান্ডা ম্যাকনিউ বলেন, ‘আমাদের শহর জাতীয় ও আন্তর্জাতিক করপোরেশনের কাছে আকর্ষণীয়। তাই কোনো প্রকল্পের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত আমাদের মন্তব্য করা মানায় না।’
উইলো বেন্ড মলের ভেতরে এখনো সক্রিয় রয়েছে নর্থ টেক্সাস পারফর্মিং আর্টস, স্থানীয় একটি অলাভজনক শিল্প সংগঠন। এর প্রধান ড্যারেল রোডেনবাফ বলেন, মলে তাদের ভবিষ্যৎ এখন অনিশ্চিত। তিনি আশঙ্কা করছেন, নতুন স্টেডিয়াম হলে পার্কিং ও যানজট বড় সমস্যা হতে পারে। তার ভাষায়, ‘এটা খুব জনপ্রিয় প্রস্তাব হবে বলে মনে হয় না। একটি উচ্চবিত্ত আবাসিক এলাকায় এমন উন্নয়ন বিরল—কমিউনিটির প্রতিক্রিয়া তাই হবে দেখার মতোই।’
স্টারস যদি সত্যিই ডালাস ছাড়ে, তাহলে আগামী ৬ থেকে ৮ মাসের মধ্যেই তাদের নতুন জায়গা চূড়ান্ত করতে হবে। নির্মাণ শুরু করতে হবে ২০২৮ বা ২০২৯ সালে, যাতে ২০৩১–৩২ মৌসুমে নতুন অ্যারেনায় দল উঠতে পারে।
ডালাস স্টারসের সম্ভাব্য নতুন ঘর হয়তো এখনো শুধু কল্পনা। কিন্তু প্ল্যানোর এই পুরোনো মল হয়তো শিগগিরই আবার আলোচনায় আসতে চলেছে। তাবে কেনাকাটার জন্য নয়, বরফের মাঠে তারকাদের খেলা দেখার সম্ভাবনায়।
তথ্যসূত্র: ডালাস মর্নিং নিউজ