আরেকটি ফ্লু ঢেউয়ের আশঙ্কা চিকিৎসকদের
গত মৌসুমে রেকর্ডসংখ্যক মানুষকে আক্রান্ত করা ফ্লু এবারও ভয় ধরাচ্ছে চিকিৎসকদের। ভাইরাসের ধরন প্রায় আগের মতো থাকায় বিশেষজ্ঞরা নতুন জ্বরের প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা করছেন।
গত মৌসুমে রেকর্ডসংখ্যক মানুষকে আক্রান্ত করা ফ্লু এবারও ভয় ধরাচ্ছে চিকিৎসকদের। ভাইরাসের ধরন প্রায় আগের মতো থাকায় বিশেষজ্ঞরা নতুন জ্বরের প্রাদুর্ভাবের আশঙ্কা করছেন।
যুক্তরাজ্যে শিশু ও তরুণদের মধ্যে আগেভাগেই ফ্লু বাড়ছে। জাপানে ইতোমধ্যে ফ্লু মহামারির ঘোষণা এসেছে; অনেক স্কুল বন্ধ করতে হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রেও নভেম্বরের পর সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে, যদিও সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) সাম্প্রতিক সরকারি অচলাবস্থা ও জনবল কমে যাওয়ায় নজরদারিতে সমস্যায় পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সিডিসি’র তথ্যমতে, গত মৌসুমে যুক্তরাষ্ট্রে ফ্লু সংশ্লিষ্টতায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল প্রায় ১১ লাখ মানুষ, যা ১৪ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ফ্লু–সদৃশ রোগে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার ঘটনাও ছিল এক দশকের মধ্যে সর্বাধিক। আনুমানিক ৩৮ হাজার থেকে ৯৯ হাজার মানুষ মারা গেছেন, যার মধ্যে ২৮০ শিশুও ছিল। এটি সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে প্রাণঘাতী মৌসুমগুলোর একটি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এ বছর ফ্লুর প্রধান ধরনগুলো আগের মতোই—ফ্লু ‘এ’ H1N1 ও ফ্লু ‘বি’ H3N2। ভাইরাস বিশেষজ্ঞ ড. জর্জ দিয়াজ বলেন, ‘এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না কোন ধরনটি বেশি প্রভাব ফেলবে, তবে আবারও ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব দেখা দিতে পারে।’
গবেষকেরা বলছেন, ফ্লু থেকে সুরক্ষা সময়ের সঙ্গে কমে যায়, তাই আগের বছর আক্রান্ত হলেও আবার ঝুঁকি থাকতে পারে, বিশেষ করে বয়স্ক ও দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্নদের ক্ষেত্রে।
অ্যাঞ্জেলা রাসমুসেন, ইউনিভার্সিটি অব সাসকাচেওয়ানের ভাইরোলজিস্ট, বলেন, ‘ফ্লুর বিস্তার ঠেকাতে সামাজিক সচেতনতা ও নীতিগত পদক্ষেপ এখন বৈজ্ঞানিক প্রস্তুতির চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ।’
সিডিসি জানিয়েছে, অক্টোবর মাসই টিকা নেওয়ার সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। ভ্যান্ডারবিল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ড. উইলিয়াম শ্যাফনার বলেন, ‘এ সময় টিকা নিলে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ভালো সুরক্ষা পাওয়া যাবে।’
তবে টিকাদান হার কমে যাওয়া এবং জনস্বাস্থ্য খাতে দুর্বলতা থাকায় এ মৌসুম ফ্লু কতটা ভয়াবহ হবে, তা আগেভাগেই বলা কঠিন।
তথ্যসূত্র: এনবিসি