চার্লি চ্যাপলিনের অসমাপ্ত শেষ সিনেমার চিত্রনাট্য নিয়ে বই ‘দ্য ফ্রিক’
বিশ্ব চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি কৌতুকাভিনেতা চার্লি চ্যাপলিনের অসমাপ্ত শেষ সিনেমার চিত্রনাট্য এবার প্রকাশিত হচ্ছে বই আকারে। শিরোনাম-'দ্য ফ্রিক: দ্য স্টোরি অব অ্যান আনফিনিশড ফিল্ম’।
বিশ্ব চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি কৌতুকাভিনেতা চার্লি চ্যাপলিনের অসমাপ্ত শেষ সিনেমার চিত্রনাট্য এবার প্রকাশিত হচ্ছে বই আকারে। শিরোনাম-'দ্য ফ্রিক: দ্য স্টোরি অব অ্যান আনফিনিশড ফিল্ম’।
১৯৭৭ সালে ৮৮ বছর বয়সে মৃত্যুর আগে চ্যাপলিন এই সিনেমার কাজ করছিলেন। তার রেখে যাওয়া পাণ্ডুলিপি, স্টোরিবোর্ড ও স্কেচ থেকে অংশবিশেষ জোড়া লাগিয়ে বইটি সম্পাদনা করেছে ‘স্টিকিং প্লেস বুকস’ প্রকাশনা।
চ্যাপলিন এই সিনেমায় তৈরি করেছিলেন এক অনন্য নারী চরিত্র ‘সারাফা’, যার ডানা আছে পাখির মতো এবং যার ক্ষমতা ছিল অসুস্থ মানুষকে সারিয়ে তোলার ও পৃথিবীতে শান্তি ফিরিয়ে আনার। সারাফার ভূমিকায় অভিনয় করার কথা ছিল চ্যাপলিনের কন্যা ভিক্টোরিয়ার।
চ্যাপলিন নিজেও সিনেমার একটি সংক্ষিপ্ত চরিত্রে অভিনয়ের পরিকল্পনা করেছিলেন এক মাতাল মানুষ হিসেবে। আকাশে পার্লামেন্ট ভবনের ওপর উড়ন্ত সারাফাকে দেখে যিনি বিস্মিত হন।
চিত্রনাট্যে বিস্তারিতভাবে বর্ণনা আছে বিশেষ দৃশ্য, বাজেট ও প্রযোজনা সূচির। লেখক ও চ্যাপলিন জীবনীকার ডেভিড রবিনসন বলেন, ‘ছবিটি শেষ না হওয়া সত্যিই দুঃখজনক,। এটি একটি অসাধারণ সৃষ্টি হতে পারত।’
ভিক্টোরিয়া স্মৃতিচারণে জানান, ‘বাবা সপ্তাহের পর সপ্তাহ উড়ন্ত পাখিদের পর্যবেক্ষণ করতেন, কীভাবে পর্দায় তা বাস্তবভাবে দেখানো যায় তা ভাবতেন। কিন্তু প্রযুক্তি তাঁর কল্পনাকে ধরতে পারেনি।’
এর আগে ২০২০ সালে ইতালীয় ভাষায় সীমিত পরিসরে চিত্রনাট্যটি প্রকাশ করেছিল ‘সিনেটিকা ডি বলোংনা’, যারা চ্যাপলিন আর্কাইভ পরিচালনা করে। এবার প্রথমবারের মতো ইংরেজিতে প্রকাশ পাচ্ছে সম্পূর্ণ সংস্করণটি।
বইটির সম্পাদক সেসিলিয়া সেনসিয়ারেলা বলেন, ‘‘দ্য ফ্রিক’ সম্পর্কে আমরা শত শত অজানা নথি পেয়েছি। এগুলো প্রমাণ করে, সিনেমাটি নির্মাণের একেবারে কাছাকাছি ছিল।’
ব্রিটিশ শিল্পী জেরাল্ড লার্ন জানান, তিনি সারাফার জন্য ১৫০টিরও বেশি স্কেচ এঁকেছিলেন। বললেন, ‘চ্যাপলিন ঠিক কী চান তা পরিষ্কার জানতেন, অসম্ভবের সীমায়ও সম্ভাবনা খুঁজতেন তিনি।’
এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে যিনি নিঃশব্দ কৌতুককে মানবতার ভাষায় রূপ দিয়েছিলেন, সেই চার্লি চ্যাপলিনের শেষ স্বপ্ন ‘দ্য ফ্রিক’ এবার মলাটবন্দী হয়ে ফিরে আসছে। যেন অসমাপ্ত শিল্পের এক নীরব পুনর্জন্ম!
(দ্য গার্ডিয়ান অবলম্বনে)