টেক্সাসের প্রাণঘাতী বন্যা: যে ৪ টি প্রশ্নের উত্তর এখনো মেলেনি
চলতি মাসের ৪ তারিখে টেক্সাসে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। এক সপ্তাহ পার হলেও এখনো বহু প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। নিহতের সংখ্যা এরই মধ্যে ১২০ ছাড়িয়েছে এবং প্রায় ১৬০ জন এখনো নিখোঁজ বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষত গুয়াদালুপে নদীর পাশে থাকা পর্যটক, স্থানীয় বাসিন্দা এবং ক্যাম্পারদের ওপরই ছিল এই বন্যার সবচেয়ে বেশি প্রভাব।

চলতি মাসের ৪ তারিখে টেক্সাসে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। এক সপ্তাহ পার হলেও এখনো বহু প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। নিহতের সংখ্যা এরই মধ্যে ১২০ ছাড়িয়েছে এবং প্রায় ১৬০ জন এখনো নিখোঁজ বলে ধারণা করা হচ্ছে। বিশেষত গুয়াদালুপে নদীর পাশে থাকা পর্যটক, স্থানীয় বাসিন্দা এবং ক্যাম্পারদের ওপরই ছিল এই বন্যার সবচেয়ে বেশি প্রভাব।
এই বন্যা নিয়ে বহু প্রশ্ন জনমনে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য যে চারটি প্রশ্নের উত্তর এখনো পাওয়া যায়নি, সেগুলো তুলে ধরা হলো:
১. সরকার আগে থেকে কী প্রস্তুতি নিয়েছিল?
বন্যাকে ঘিরে সরকারের প্রস্তুতি সম্পর্কিত পূর্ণাঙ্গ তথ্য এখনো অজানা। বন্যার দু’দিন আগে টেক্সাস ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ কিছু জরুরি রেসপন্স টিম সক্রিয় করে। এর পরের দিন প্রস্তুতির স্তর আরও বাড়ানো হয়। তবে কোন কোন এলাকায় কতজন কর্মী বা সরঞ্জাম পাঠানো হয়েছিল, তা স্পষ্ট করা হয়নি।
টেক্সাসের লেফটেন্যান্ট গভর্নর ড্যান প্যাট্রিক বলেন, ৩ জুলাই একটি ব্রিফিংয়ের আগে স্থানীয় কর্মকর্তাদের বন্যা নিয়ে সতর্ক করা হয়েছিল। কিন্তু কারো কারো মতে, এই বার্তা সবার কাছে পৌঁছায়নি। কের কাউন্টির (Kerr County) মেয়র জো হেরিং জানান, তিনি ব্যক্তিগতভাবে কোনো ফোনকল পাননি।
২. বন্যা শুরু হলে কত দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল?
এ প্রশ্নেরও কোনো পরিষ্কার উত্তর নেই। বন্যার দিন (জুলাই ৪) রাত ১:১৪ মিনিটে জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা (NWS) প্রথম ফ্ল্যাশ ফ্লাড সতর্কতা দেয়, যা ৪:০৩ মিনিটে পরিবর্তিত হয়ে 'ফ্ল্যাশ-ফ্লাড এমারজেন্সি'তে রূপ নেয়।
তবে কার কাউন্টির ফেসবুক পেজে পুলিশ ও শেরিফের অফিস থেকে প্রথম সতর্কতা আসে ভোর ৫:১৫ মিনিটে। এছাড়াও, ‘কোডরেড’ নামক একটি ইমার্জেন্সি অ্যালার্ট সিস্টেম থাকলেও এটি ব্যবহার করা হয়েছিল কি না— তা এখনো পরিষ্কার নয়।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই ৩ থেকে ৫ তারিখের মধ্যে জাতীয় আবহাওয়া সংস্থা মোবাইলে বেশ কিছু সতর্ক বার্তা পাঠালেও কের কাউন্টি থেকে ৬ জুলাইয়ের আগ পর্যন্ত কোনো বার্তা পাঠানো হয়নি ।
৩. ক্যাম্প মিস্টিক কতটা প্রস্তুত ছিল?
বন্যার দুই দিন আগে টেক্সাসের পরিদর্শকরা ক্যাম্প মিস্টিকের ইমার্জেন্সি পরিকল্পনা অনুমোদন করেন। এই ক্যাম্পটি ছিল খ্রিস্টান বালিকাদের একটি গ্রীষ্মকালীন ক্যাম্প, যেখানে তখন প্রায় ৫৫৭ জন শিশু ও ১০০+ জন কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
তবে বন্যার রাতে ক্যাম্প কতটা প্রস্তুত ছিল, তা এখনো পরিষ্কার নয়। ক্যাম্প কর্তৃপক্ষও এখনো তাদের ইমার্জেন্সি প্ল্যান নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
৪. কবে জানা যাবে আরও বিস্তারিত?
এই প্রশ্নের উত্তরও মিলছে না। বর্তমানে উদ্ধার অভিযানই সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
কের কাউন্টি জজ রব কেলি বলেন, “আমরা জানতাম না এই বন্যা আসছে।” তিনি ৫ জুলাইয়ের পর থেকে আর কোনো সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেননি।
কের কাউন্টির ইমার্জেন্সি ম্যানেজমেন্ট কোঅর্ডিনেটর ডাব থমাস সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কোনো ব্রিফিংয়ে যোগ দেননি বা কোনো বক্তব্য দেননি। শেরিফ ল্যারি লেইথা জানান, পরবর্তীতে একটি ‘আফটার-অ্যাকশন রিভিউ’ (ঘটনার বিশ্লেষণ) হবে, তবে এখন তারা নিখোঁজদের খোঁজ করতেই ব্যস্ত।
সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস