যুক্তরাষ্ট্রে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের কাজের সুযোগে বড় ধাক্কা
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে কাজের সুযোগ সীমিত করার পরিকল্পনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। নতুন অভিবাসন নীতির খসড়া অনুযায়ী, অপশনাল প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিং (ওপিটি) প্রোগ্রাম আংশিকভাবে কিংবা পুরোপুরি বাতিল হতে পারে।
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে কাজের সুযোগ সীমিত করার পরিকল্পনা করছে ট্রাম্প প্রশাসন। নতুন অভিবাসন নীতির খসড়া অনুযায়ী, অপশনাল প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিং (ওপিটি) প্রোগ্রাম আংশিকভাবে কিংবা পুরোপুরি বাতিল হতে পারে।
নীতিটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ পেতে পারে চলতি বছরের শেষ নাগাদ বা ২০২৬ সালের প্রথমার্ধে। এই প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে পড়াশোনা ও কর্মজীবনের সুযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বর্তমানে অপশনাল প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিংয়ের আওতায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা তার পড়াশোনার বিষয়ের ওপর এক বছরের জন্য কাজ করতে পারেন। আর বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত (এসটিইএম) বিষয় নিয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা আর অপশনাল প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিং প্রোগ্রামের আওতায় অতিরিক্ত দুই বছর কাজের সুযোগ পান। ২০২৩–২৪ শিক্ষাবর্ষে যুক্তরাষ্ট্রে এই দুই প্রোগ্রামে ছিলেন প্রায় আড়াই লাখ শিক্ষার্থী।
কিন্তু নতুন প্রস্তাবিত নিয়মে বলা হয়েছে, ‘প্রোগ্রামের লক্ষ্য ও নিরাপত্তা জোরদার করা এবং মার্কিন নাগরিকদের চাকরির সুযোগ রক্ষার জন্য বিদ্যমান নিয়ম সংশোধন করা হবে।’ যদিও এই নীতি আনুষ্ঠানিকভাবে অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ দপ্তর (আইসিই) তৈরি করছে, বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি-নির্ধারক স্টিফেন মিলারই এর মূল স্থপতি।
শিক্ষাবিদ ও ব্যবসায়ীরা এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করছেন। তাদের মতে, অপশনাল প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিং প্রোগ্রাম বাতিল হলে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্ভাবন, অর্থনীতি ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গবেষণা বলছে, ওপিটি এবং এসটিইএম ওপিটি প্রোগ্রামে যুক্ত বিদেশি গ্র্যাজুয়েটরা মার্কিন প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে বড় অবদান রাখছেন।
ইমিগ্রেশন বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, প্রশাসন চাইলে অপশনাল প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিং পুরোপুরি তুলে দিতে পারে বা এমন বাধা আনতে পারে যাতে প্রোগ্রামটি কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়ে। বিকল্প হিসেবে শিক্ষার্থীদের শুধু কারিকুলার প্যাকটিক্যঅল ট্রেইনিং (সিপিটি) প্রোগ্রামের মাধ্যমে পড়াশোনার সময় সীমিত কাজের সুযোগ দেওয়া হতে পারে।
সমালোচকদের মতে, এটি ট্রাম্প প্রশাসনের আরেকটি পদক্ষেপ যা বিদেশি শিক্ষার্থীদের যুক্তরাষ্ট্রে আসার আগ্রহ কমিয়ে দেবে। বিষয়টি বিশেষভাবে বিতর্কিত, কারণ ২০২৪ সালে ট্রাম্প নিজেই এক পডকাস্টে বলেছিলেন, ‘যে শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্র্যাজুয়েট হবে, তাকে সঙ্গে সঙ্গে গ্রিন কার্ড দেওয়া উচিত।’
নতুন অভিবাসন নীতি কার্যকর হলে ওপিটি এবং এসটিইএম ওপিটি প্রোগ্রাম বন্ধ বা সীমিত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এতে যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে আসা আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য চাকরির সুযোগ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যেতে পারে।
তথ্যসূত্র: ফোবর্স