টেক্সাসের বেশিরভাগ বাসিন্দার বন্যা বীমা নেই
মধ্য টেক্সাসে ৪ জুলাইয়ের ছুটির সময় যেসব এলাকা বন্যার কবলে পড়েছে, সেখানে এখনো নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে তল্লাশি চলছে। তবে কোথায় কীভাবে পুনর্গঠন হবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়।

মধ্য টেক্সাসে ৪ জুলাইয়ের ছুটির সময় যেসব এলাকা বন্যার কবলে পড়েছে, সেখানে এখনো নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধারে তল্লাশি চলছে। তবে কোথায় কীভাবে পুনর্গঠন হবে, তা এখনও পরিষ্কার নয়।
আকুওয়েদার অনুমান করেছে, এই বন্যায় অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াতে পারে ১৮ থেকে ২২ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত। শিল্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই দুর্যোগটি বহু টেক্সানদের জন্য একটি বড় বীমা-সংক্রান্ত ঘাটতির বিষয়টিকে সামনে এনেছে।
'বন্যার ক্ষেত্রে আমরা সত্যিই খুব কম বীমা করিয়ে থাকি,' বলেন রিচ জনসন। তিনি টেক্সাস ইনস্যুরেন্স কাউন্সিলের মুখপাত্র। এটি একটি ট্রেড গ্রুপ যারা রাজ্যের বহু বীমা কোম্পানিকে প্রতিনিধিত্ব করে।
একটি সাধারণ গৃহ মালিক বা ভাড়াটিয়ার বীমা নীতিতে বন্যার কারণে ঘরে পানি ঢুকে যে ক্ষতি হয়, তা কভার করা হয় না। বর্তমানে বাজারে যে বন্যা-সংক্রান্ত বীমাগুলো রয়েছে, তার বেশিরভাগই ফেডারেল সরকারের সহায়তাপ্রাপ্ত। সাধারণত ভোক্তারা জাতীয় বন্যা বীমা কর্মসূচি (এনএফআইপি) থেকে এই বীমা কেনেন। আইসিটি বলছে, কিছু প্রাইভেট বীমা কোম্পানি বন্যা বীমা দিয়ে থাকে, তবে বেশিরভাগ বীমা বিক্রি করে এনএফআইপি।
কিছু বাড়িকে বন্যার উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেখানে মর্টগেজ প্রদানকারী সংস্থাগুলো সেই বাড়ির মালিকদের জন্য বন্যা বীমা গ্রহণ বাধ্যতামূলক করতে পারে। তবে যেসব বাড়ি এমন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় পড়ে না, তাদের জন্য বন্যা বীমা রাখা সম্পূর্ণরূপে ঐচ্ছিক।
'টেক্সাসজুড়ে গড়ে মাত্র ৭% বাড়ির বন্যা বীমা রয়েছে। আর যখন আপনি ডালাস-ফোর্ট ওয়ার্থ, সান অ্যান্তোনিও বা হান্ট কাউন্টির মতো অভ্যন্তরীণ এলাকায় যান, যেখানে এবারের বন্যা হয়েছে, সেখানে মাত্র ১% বা ২% মানুষ বন্যা বীমা করিয়েছেন,' বলেন জনসন।
এফইএম- এর বন্যা ঝুঁকির ম্যাপে যেসব জায়গাকে 'ন্যূনতম বন্যা ঝুঁকিপূর্ণ' হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, সেসব জায়গাও প্লাবিত হয়েছে। ২০২২ সালে উত্তর টেক্সাসে ভারী বৃষ্টির সময় ২৪ ঘণ্টায় ৯ ইঞ্চি বৃষ্টি হয়েছিল। অনেক ভোক্তা জানিয়েছেন, তাদের সাধারণ বীমা নীতিমালা থাকলেও পরে তারা বুঝতে পারেন যে বন্যার ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি সেই বীমার আওতাভুক্ত নয়, কারণ সেটি আলাদাভাবে নেওয়া বন্যা বীমা ছিল না।
আপনি চাইলে এফইএমএ-র ফ্লাড ম্যাপ সার্ভিস সেন্টারে গিয়ে আপনার ঠিকানা দেখে নিতে পারেন। এফইএমএ জানিয়েছে, 'ন্যূনতম ঝুঁকি' মানেই 'শূন্য ঝুঁকি' নয়। ফ্ল্যাশ ফ্লাড যেকোনো স্থানে ঘটতে পারে। গড় হিসেবে, এনএফআইপি-এ জমা পড়া বন্যা দাবির প্রায় ৪০ শতাংশই আসে উচ্চ ঝুঁকির বাইরে থাকা এলাকাগুলো থেকে।
যাদের বাসাবাড়ির জন্য আলাদা বন্যা বীমা রয়েছে, তারাও বড় ধরণের ক্ষতির ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতার মুখে পড়তে পারেন। এনএফআইপি নীতিতে সর্বোচ্চ কভারেজ হলো একটি ভবনের জন্য ২৫০,০০০ ডলার এবং ঘরের জিনিসপত্রের জন্য ১০০,০০০ ডলার।
বড় দুর্যোগের সময় এফইএমএ ব্যক্তি সহায়তা দিতে পারে। তবে সেই সহায়তা একটি বাড়ি পুনর্গঠনের জন্য সাধারণত যথেষ্ট নয়। এফইএমএ জানিয়েছে, হারিকেন হারভির পর গড়ে তারা প্রতিজনের জন্য ৪,৪০০ ডলার সহায়তা দিয়েছিল, যেখানে গড় বন্যা বীমা দাবির পরিমাণ ছিল প্রায় ১১৫,০০০ ডলার।
আইসিটি জানিয়েছে, টেক্সাসে বন্যা বীমার গড় প্রিমিয়াম বছরে প্রায় ৭০০ ডলার, যদিও দাম পরিবর্তিত হয় জলের উৎসের নৈকট্য ও পুনর্গঠনের সম্ভাব্য ব্যয়ের উপর নির্ভর করে। এনবিসি-ফাইভ বিভিন্ন উত্তর টেক্সাস এলাকায় তিন বেডরুম ও দুই বাথরুমের ঘর নিয়ে অনলাইনে নমুনা কোট বের করেছে। সেখানে দেখা গেছে, ১৫০০ থেকে ২৫০০ স্কয়ার ফুটের বাড়িগুলোর জন্য প্রিমিয়াম ৩৮০ ডলার থেকে ৭০০ ডলারের বেশি পর্যন্ত হতে পারে।
যদিও এনএফআইপি বন্যা বীমা বিক্রি করে, ভোক্তারা তাদের বর্তমান বীমা কোম্পানি বা এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করেই পলিসি নিতে পারেন। এনএফআইপির ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, তারা বিভিন্ন বীমা কোম্পানি ও স্বাধীন এজেন্টদের সঙ্গে কাজ করে। একই প্রাইসিং কাঠামো ব্যবহার হওয়ায়, গ্রাহকদের আলাদাভাবে খোঁজাখুঁজি করে দাম তুলনা করার দরকার পড়ে না।
বন্যায় প্লাবিত গাড়িগুলোর জন্য, টেক্সাস ডিপার্টমেন্ট অফ ইনস্যুরেন্স বলছে, কম্প্রিহেনসিভ পলিসি থাকলে সেই ক্ষতি কভার হয়। শুধু লাইয়াবিলিটি বা কোলিশন পলিসিতে এটি কভার হয় না। আপনার বীমা পলিসির 'ডিক্লারেশন পেজ'— সাধারণত প্রথম এক বা দুই পৃষ্ঠা— তাতে কোন ধরনের কভারেজ আপনি রেখেছেন, তা উল্লেখ থাকে।
সোর্স: এনবিসি-ফাইভ