ট্রাম্পের পদক্ষেপে নতুন উত্তেজনা, বাড়ছে ভেনেজুয়েলায় হস্তক্ষেপের ঝুঁকি
ভেনেজুয়েলায় প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত ৪৮ ঘণ্টায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ওয়াশিংটনের কড়া অবস্থানের পরিচায়ক।
ভেনেজুয়েলায় প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে একের পর এক পদক্ষেপ নিচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত ৪৮ ঘণ্টায় তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ওয়াশিংটনের কড়া অবস্থানের পরিচায়ক।
এই তিন ঘটনা হলো্-সিআইএকে গোপন অভিযান চালানোর অনুমতি, ভেনেজুয়েলার উপকূলে তিনটি বি–৫২ বোমারু বিমানের মহড়া, এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন কমান্ডের প্রধান অ্যাডমিরাল আলভিন হোলসির পদত্যাগ।
নিউইয়র্ক টাইমসের এক ফাঁস হওয়া তথ্যে জানা যায়, ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় ‘প্রাণঘাতী অভিযান’ পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন সিআইএকে। কেউ কেউ মনে করছেন, এটি প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ বিশৃঙ্খলার ফল, আবার অনেকে দেখছেন রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে, যার লক্ষ্য মাদুরোর ঘনিষ্ঠ মহলকে ভয় দেখানো।
একই সময়ে, যুক্তরাষ্ট্র মাদুরোর বিরুদ্ধে মাদক পাচার মামলায় তথ্য দিলে ৫ কোটি ডলার পুরস্কার ঘোষণা করেছে। ভেনেজুয়েলাকে ‘অভিবাসন সংকট’ ও ‘মাদক চোরাচালানের ঘাঁটি’ হিসেবে চিত্রিত করায় প্রশাসনের লক্ষ্য স্পষ্ট—মাদুরোর ওপর সর্বোচ্চ চাপ সৃষ্টি।
অন্যদিকে, সাউদার্ন কমান্ডে পরিবর্তন এনে ও বি–৫২ মহড়ার মাধ্যমে সামরিক বিকল্পের ইঙ্গিতও মিলছে। এসব পদক্ষেপের নেতৃত্বে রয়েছেন জেনারেল ড্যান কেইন, যিনি এর আগে সিআইএ-তে সামরিক বিষয়ক পরিচালক ছিলেন।
এদিকে, ট্রাম্পের বিশেষ দূত রিচার্ড গ্রেনেল মাদুরোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বন্দিমুক্তি ও সীমিত তেল ব্যবসায় পুনরায় অনুমোদন দিয়েছিলেন। কিন্তু সাম্প্রতিক ব্যর্থতার পর তাঁকে সরিয়ে দিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
ভেনেজুয়েলা এখনো এক বৈপরীত্যের দেশ্-বিশ্বের সবচেয়ে বড় তেলের মজুদ রয়েছে সেখানে, অথচ মানবিক সংকট চরমে। নোবেলজয়ী মারিয়া কোরিনা মাচাদো ও তাঁর সমর্থিত প্রার্থী এডমুন্ডো গনসালেস উরুতিয়া নির্বাচনে জয়ের দাবি তুললেও, মাদুরো সরকার তা অস্বীকার করে দমননীতি চালু রেখেছে।
পর্যবেক্ষকদের মতে, এখন দুই বিষয় নির্ধারণ করবে আগামীর পথ—প্রথমত, যুক্তরাষ্ট্র কতটা নির্ভুলভাবে গোপন অভিযান চালাতে পারে; দ্বিতীয়ত, মাচাদোর নেতৃত্বাধীন বিরোধীরা গণতান্ত্রিক রূপান্তরের প্রস্তুতি কতটা দৃঢ় করতে পারে।
যদি উভয় দিকেই সমন্বয় আসে, মাদুরোর পতন ত্বরান্বিত হতে পারে। না হলে, ভেনেজুয়েলার সংকট আরও দীর্ঘ ও অগোছালো হয়ে উঠবে। আর যুক্তরাষ্ট্রকেই দিতে হবে এর কূটনৈতিক মাশুল।
তথ্যসূত্র: এমএসএনবিসি