‘দুইয়ের বেশি লিঙ্গ’ শেখানো নিয়ে টেক্সাস এঅ্যান্ডএমে অস্থিরতা, ডিন-চেয়ার পদচ্যুত

টেক্সাস এঅ্যান্ডএম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু সাহিত্য ক্লাসে জেন্ডার আইডেন্টিটি বিষয়ক কনটেন্ট নিয়ে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এর জেরে কলেজ অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সের ডিন ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধানকে অপসারণের ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট মার্ক এ. ওয়েলশ তৃতীয়।

Sep 10, 2025 - 20:40
‘দুইয়ের বেশি লিঙ্গ’ শেখানো নিয়ে টেক্সাস এঅ্যান্ডএমে অস্থিরতা, ডিন-চেয়ার পদচ্যুত

টেক্সাস এঅ্যান্ডএম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু সাহিত্য ক্লাসে জেন্ডার আইডেন্টিটি বিষয়ক কনটেন্ট নিয়ে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এর জেরে কলেজ অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সের ডিন ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রধানকে অপসারণের ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট মার্ক এ. ওয়েলশ তৃতীয়।

সোমবার অনলাইনে একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ঘটনাটি বড় আকার ধারণ করে। সেখানে দেখা যায়, এক শিক্ষার্থী ক্লাসে অধ্যাপককে প্রশ্ন করছেন কেন তিনি “দুইয়ের বেশি লিঙ্গ” বিষয়টি পড়াচ্ছেন। শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন, এটি ট্রাম্প প্রশাসনের নির্বাহী আদেশ ও তার ধর্মীয় বিশ্বাসের বিরোধী। উত্তরে অধ্যাপক জানান, তিনি এই বিষয় পড়ানোর অধিকার রাখেন, আর শিক্ষার্থীর চাইলে ক্লাস ছেড়ে যাওয়ার অধিকার আছে।

ভিডিও প্রকাশের পর রিপাবলিকান আইনপ্রণেতারা কঠোর সমালোচনা করেন এবং তদন্তের দাবি জানান। যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগও বিষয়টি খতিয়ে দেখার ঘোষণা দিয়েছে। টেক্সাস এঅ্যান্ডএম সিস্টেমের চ্যান্সেলর গ্লেন হেগার এক বিবৃতিতে জানান, সংশ্লিষ্ট অধ্যাপকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তার ভাষায়, এঅ্যান্ডএম সিস্টেমের শিক্ষকরা ব্যক্তিগত রাজনৈতিক এজেন্ডা চাপিয়ে দিতে পারেন না। আমরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষক ও শিশু-সেবা পেশাজীবীদের তৈরি করছি, যা সর্বাগ্রে শিশুদের সুরক্ষাকে গুরুত্ব দেবে, কোনো প্রকার ‘ইন্ডক্ট্রিনেশন’ নয়।”

ওয়েলশ সোমবার রাতে এক বিবৃতিতে বলেন, “শিক্ষার্থীরা কোর্স ক্যাটালগ দেখে তাদের ডিগ্রির জন্য সিদ্ধান্ত নেয়। যদি বিজ্ঞাপিত বর্ণনার সঙ্গে কোর্সের বিষয়বস্তু না মেলে, তাহলে আমরা শিক্ষার্থীদের প্রতি দায়বদ্ধতা ভঙ্গ করি। তাই আমাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতেই এ সিদ্ধান্ত।”

তবে এখনো পরিষ্কার নয়, বরখাস্ত হওয়া ডিন ও বিভাগীয় প্রধান অন্য কোনো ভূমিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবেন কিনা।

এর আগে ভাইরাল হওয়া ভিডিওর এক পর্যায়ে ওয়েলশকে শিক্ষার্থীকে বলতে শোনা যায়: আপনি চান আমরা তাকে (অধ্যাপককে) বরখাস্ত করি?” শিক্ষার্থী যখন উত্তর দেন “হ্যাঁ”, তখন ওয়েলশ বলেন, “তা হচ্ছে না।” কিন্তু রাজনৈতিক চাপ বাড়তে থাকায় সোমবার রাতেই তিনি ভিন্ন সিদ্ধান্ত নেন।

টেক্সাস প্রতিনিধি ব্রায়ান হ্যারিসন—যিনি এ ভিডিও প্রথম সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করেন—বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়কে কঠোর জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে।"

হেগার জানান, প্রাথমিক পর্যালোচনায় অধ্যাপক কোর্স বিবরণীর সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং এ ধরনের অভিযোগ আগেও ছিল। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থী বা অধ্যাপকের নাম প্রকাশ করেনি।

প্রসঙ্গত, ওয়েলশ ২০২৩ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন, যখন টেক্সাস আইনসভা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ডিইআই (ডাইভারসিটি, ইক্যুইটি, ইনক্লুশন) অফিস ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে। এর আগের প্রেসিডেন্ট ক্যাথেরিন ব্যাংকস রাজনৈতিক চাপের মুখে পদত্যাগ করেছিলেন। এরপর থেকেই রক্ষণশীল নেতারা উচ্চশিক্ষায় আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছেন।

ঘটনাটি এমন এক সময়ে ঘটলো যখন আগামী ১ জানুয়ারি থেকে সেনেট বিল ৩৭ কার্যকর হবে। এই আইনের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্টদের পাঠ্যক্রম নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বাড়ানো হয়েছে। সমালোচকদের মতে, রক্ষণশীল সংখ্যাগরিষ্ঠ আইনসভা চাইলে এই ক্ষমতা ব্যবহার করে তাদের পছন্দ না হওয়া প্রোগ্রামগুলো বন্ধ করতে পারে।

সূত্র: টেক্সাস ট্রিবিউন