এক শ বছরেরও বেশি সময় পর মিলল দুই সৈনিকের বোতলবন্দি চিঠি
অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্রতটে পাওয়া গেছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে দুই সৈনিকের লেখা চিঠি। অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিম উপকূলের নির্জন সৈকতে পাওয়া এই চিঠি যেন সবাইকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় এক শ বছরেরও বেশি আগের সময়ে। হোয়াটন বিচে বালুর নিচে চাপা ছিল এক কাঁচের বোতল—ভেতরে দুই তরুণ সৈনিকের হাতের লেখা বার্তা, তারিখ ১৯১৬।
অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্রতটে পাওয়া গেছে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে দুই সৈনিকের লেখা চিঠি। অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিম উপকূলের নির্জন সৈকতে পাওয়া এই চিঠি যেন সবাইকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় এক শ বছরেরও বেশি আগের সময়ে। হোয়াটন বিচে বালুর নিচে চাপা ছিল এক কাঁচের বোতল—ভেতরে দুই তরুণ সৈনিকের হাতের লেখা বার্তা, তারিখ ১৯১৬।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সেই ভয়াল সময়টিতে ফ্রান্সের যুদ্ধক্ষেত্রে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন প্রাইভেট ম্যালকম নেভিল ও প্রাইভেট উইলিয়াম হার্লি। জাহাজে ওঠার কয়েক দিনের মধ্যেই দু’জনেই লিখেছিলেন এই চিঠি।
ম্যালকম নেভিল তাঁর মাকে লিখেছিলেন, “জাহাজের খাবার দারুণ, আমরা ল্যারি’র মতোই খুশি।” কয়েক মাস পর ২৮ বছর বয়সে তিনি যুদ্ধে নিহত হন। অপর সৈনিক উইলিয়াম হার্লি, বয়স ৩৭, সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে ফিরে আসেন যুদ্ধশেষে।
বোতলটি সম্প্রতি খুঁজে পান ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার স্থানীয় বাসিন্দা ডেব ব্রাউন ও তাঁর পরিবার। তারা নিয়মিত সৈকত পরিষ্কার করতে যান—তখনই চোখে পড়ে বালুর নিচে চাপা একটি পুরু কাঁচের বোতল। ভিতরে দুটি ভেজা হলেও পাঠযোগ্য চিঠি।
ব্রাউন পরিবারের আগ্রহে শুরু হয় অনুসন্ধান। চিঠিতে উল্লেখিত ঠিকানা ধরে খুঁজে পাওয়া যায় ম্যালকম নেভিলের প্রপৌত্র হারবি নেভিলকে। খবর পেয়ে তাঁর পরিবার হতবাক—বিশেষ করে ম্যালকমের ভাতিজি মেরিয়ান ডেভিস, যিনি মনে করতে পারেন চাচাকে যুদ্ধের উদ্দেশ্যে বিদায় জানানোর সেই দিনটিকে।
দ্বিতীয় চিঠিটি ছিল হার্লির লেখা, উদ্দেশ্য “যে-ই এই বোতলটি খুঁজে পাবে।” কারণ তাঁর মা তখন বেঁচে ছিলেন না। হার্লির নাতনি অ্যান টার্নার বলেন, “এটা যেন কবরের ওপার থেকে আমাদের দিকে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে দাদু। আমরা সবাই অভিভূত।”
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, বোতলটি সমুদ্রে খুব বেশি দিন ভেসে থাকেনি; বরং কয়েক সপ্তাহ পরই ভেসে আসে হোয়াটন বিচে, তারপর শত বছর ধরে বালুর নিচে চাপা ছিল ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে।
এক শতাব্দী পেরিয়ে, বোতলবন্দি সেই বার্তা এখন যুদ্ধের স্মৃতি ছুঁয়ে যায় প্রজন্মান্তরে। সময়ের স্রোতে হারিয়ে যাওয়া দুই সৈনিক যেন আবার ফিরে এলেন তাঁদের লেখা কয়েকটি সরল শব্দের মাধ্যমে।
তথ্যসূত্র: বিবিসি