স্কুলে বন্দুক হামলা হলে সাহায্য করবে ড্রোন
সোমবার ল্যাঙ্কাস্টার মিডল স্কুলের হলওয়ে ও করিডোরগুলোতে ড্রোনগুলো গুঞ্জরিত হচ্ছিল। গড়ে ঘণ্টায় প্রায় ৫০ মাইল বেগে উড়ে ওঠা নামা করছিল তিনটি ড্রোন। এগুলো কোনো মজার জন্য নয়, বরং সশস্ত্র হামলার সময় নিরাপত্তার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।

সোমবার ল্যাঙ্কাস্টার মিডল স্কুলের হলওয়ে ও করিডোরগুলোতে ড্রোনগুলো গুঞ্জরিত হচ্ছিল। গড়ে ঘণ্টায় প্রায় ৫০ মাইল বেগে উড়ে ওঠা নামা করছিল তিনটি ড্রোন। এগুলো কোনো মজার জন্য নয়, বরং সশস্ত্র হামলার সময় নিরাপত্তার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে।
অস্টিন ভিত্তিক কোম্পানি 'ক্যাম্পাস গার্ডিয়ান অ্যাঞ্জেল' সোমবার ল্যাঙ্কাস্টারে তাদের সশস্ত্র হামলার জরুরি প্রতিক্রিয়া হিসেবে ব্যবহারযোগ্য ড্রোনের প্রদর্শনী করেছে।
মিয়ামি-ডেড কাউন্টি পাবলিক স্কুলস জেলা, বর্ণ আইএসডি এবং ওয়াকো আইএসডিতে ইতিমধ্যেই এই ড্রোন প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হয়েছে। কোম্পানিটি আশা করছে, ডালাসের অন্যান্য স্কুলেও এই জরুরি প্রতিক্রিয়া ব্যবস্থা চালু করা যাবে।
ক্যাম্পাস গার্ডিয়ান অ্যাঞ্জেলের সিইও জাস্টিন মারস্টন বলেছেন, ড্রোনের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে হামলাকারীর মনোযোগ বিক্ষিপ্ত করা যাতে করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আসার সময় পর্যন্ত তাকে ব্যস্ত রাখা যায়।
মারস্টন বলেন, 'যদি হামলাকারী ড্রোনগুলোকে গুলি করতে ব্যস্ত থাকে, তাহলে তার হাতে মানুষের ক্ষতি করার সময় কমে যাবে, এমনকি কেউ প্রাণ হারাতে নাও পারে।'
'আমরা গুলিবিদ্ধ হলেও কিছু যায় আসে না, কারণ আমরা শুধু প্লাস্টিকের কিছু অংশ, তাই আমরা যে কোনো ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত,' মারস্টন বলেন।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি ড্রোন হামলাকারীর সঙ্গে লড়াইয়ে আলাদা ভূমিকা পালন করে। একটি ড্রোন হামলাকারীর প্রতিটি চলাফেরারওেপর নজর রাখে, আরেকটি তার মনোযোগ বিভ্রান্ত করে এবং তার কাজ ধীর করে দেয়।
প্রতিটি ড্রোন নিয়ন্ত্রণ করে প্রশিক্ষিত পাইলটরা। এই ড্রোনগুলোতে লঘু ক্ষতিকর পেপার বল থাকে, যা হামলাকারীর হাত থেকে অস্ত্র ছিনিয়ে নিতে সাহায্য করে যতক্ষণ না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পৌঁছায়। এছাড়াও ড্রোনগুলোতে এমন একটি আঘাতকারী যন্ত্রাংশ রয়েছে যা প্রয়োজনে কাঁচ ভেঙে হামলাকারীর কাছে পৌঁছাতে পারে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যখন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়, তখন ড্রোনগুলো তাদের অপরিচিত স্কুলের মধ্যে পথনির্দেশনা দিতে সাহায্য করে যাতে হামলাকারী দ্রুত খুঁজে পাওয়া যায় এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।
ডালাসের ডি-ড্যালাসের রাজ্য সিনেটর রোয়েস ওয়েস্ট বলেছেন, টেক্সাসের স্কুলগুলোকে নিরাপদ রাখতে নতুন সমাধানের প্রয়োজন।
'আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, আমাদের শিশুদের সুরক্ষিত রাখা,' ওয়েস্ট বলেন। 'আমাদের আক্রমণকারীদের বাধা দিতে হবে। আমরা উভ্যাল্ডে কী ঘটেছিল তা দেখেছি। স্কুল রিসোর্স অফিসাররা প্রবেশ করতে দ্বিধা করেছিল। এটা বোঝা দরকার যে তাদেরও বিপদ আছে, কিন্তু তারা সবার সামনে লড়াই করছে।'
ওয়েস্ট আরও জোর দিয়ে বলেন, এই ধরনের প্রোগ্রামগুলো যেন স্কুল জেলা ও রাজ্য উভয়ের জন্যই সহজলভ্য এবং সাশ্রয়ী হয়।
ক্যাম্পাস গার্ডিয়ান ওয়েবসাইট অনুসারে, এই প্রোগ্রামটি বাস্তবায়নের জন্য ছাত্রপ্রতি প্রতি মাসে মাত্র ৪ ডলার খরচ হবে।আর ছয়টি ড্রোনের একটি সেটের দাম প্রায় ১৫,০০০ ডলার।
'আমরা এটি সাশ্রয়ী করার চেষ্টা করেছি,' মারস্টন বলেন। 'প্রাইভেট স্কুলগুলো আমাদের বলেছে তারা এটা পেতে ১০ গুণ দামও দিতে রাজি, কিন্তু পাবলিক স্কুলের কাছে এত টাকা থাকে না, তাই আমরা চেষ্টা করেছি সবকিছু এত সস্তা করে বানাতে যেন এটি শুধু ধনী স্কুল বা প্রাইভেট স্কুলের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে।'
ডালাস ইনডিপেনডেন্ট স্কুল জেলা পুলিশের প্রধান আলবার্ট মার্টিনেজ বলেন, ড্রোনের জন্য আরও বিভিন্ন ব্যবহারিক উপায় খোলার প্রয়োজন।
এপ্রিল মাসে ডিআইএসডির উইলমার-হাচিন্স হাই স্কুলে দ্বিতীয়বারের মতো গুলি চালানো হয়েছিল। সেখানে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী এবং একজন শিক্ষক আহত হন। সোমবারের প্রদর্শনীতে মার্টিনেজ ওই ঘটনায় মন্তব্য করেননি। তবে তিনি বলেছেন, জেলা প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ করার আগে তাকে আরও দেখতে হবে।
মার্টিনেজ বলেন, যদি ক্যাম্পাস গার্ডিয়ান অ্যাঞ্জেল ড্রোনগুলোকে শুধু সশস্ত্র হামলায় ব্যবহার না করে দৈনন্দিন বিভিন্ন সমস্যার প্রতিক্রিয়াতেও ব্যবহার করতে পারে, তাহলে ডিআইএসডি অংশগ্রহণে আগ্রহী হবে।
'আমাদের যতই খরচ হোক, আমি আরও কিছু চাই,' মার্টিনেজ বলেন। 'কতবার আসলে সশস্ত্র হামলার ঘটনা ঘটবে? দৈনন্দিন ভিত্তিতে আর কী কী সুবিধা দিতে পারো যা আমাদের ছাত্র, কর্মী, শিক্ষক এবং স্কুল নিরাপত্তা অফিসারদের রক্ষা করবে, এমনকি ফুটবল ম্যাচ, ভলিবল ম্যাচ বা যেকোনো অনুষ্ঠানে?'
সূত্র: ডালাস নিউজ