দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে জাতিসংঘ পানি কনভেনশনে যোগ দিল বাংলাদেশ

দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম এবং বিশ্বে ৫৬তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ জাতিসংঘের ‘প্রোটেকশন অ্যান্ড ইউজ অব ট্রান্সবাউন্ডারি ওয়াটারকোর্সেস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল লেকস (ইউএন ওয়াটার কনভেনশন)’-এ যোগ দিয়েছে। চলতি বছরের ২০ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ এ চুক্তিতে যুক্ত হয়। মঙ্গলবার (২৪ জুন) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

Jun 24, 2025 - 21:59
দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে জাতিসংঘ পানি কনভেনশনে যোগ দিল বাংলাদেশ

দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম এবং বিশ্বে ৫৬তম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ জাতিসংঘের ‘প্রোটেকশন অ্যান্ড ইউজ অব ট্রান্সবাউন্ডারি ওয়াটারকোর্সেস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল লেকস (ইউএন ওয়াটার কনভেনশন)’-এ যোগ দিয়েছে। চলতি বছরের ২০ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ এ চুক্তিতে যুক্ত হয়। মঙ্গলবার (২৪ জুন) পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা (জিবিএম) নদী ব্যবস্থাসহ বাংলাদেশে ৫৭টি আন্তঃসীমান্ত নদী প্রবাহিত হচ্ছে। এসব নদীর সমন্বিত ও যৌথ ব্যবস্থাপনা পরিবেশগত ভারসাম্য, পানি নিরাপত্তা এবং আঞ্চলিক স্থিতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা বিস্তার এবং এখনো প্রায় ৬ কোটি ৫০ লাখ মানুষের নিরাপদ পয়ঃনিষ্কাশনের সুযোগ না থাকা—এসব মিলিয়ে টেকসই ও ন্যায্য পানি ব্যবস্থাপনার প্রয়োজনীয়তা আরও জোরালোভাবে সামনে এসেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, বাংলাদেশ ২০১২ সাল থেকেই জাতিসংঘ পানি কনভেনশনের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত রয়েছে এবং সর্বশেষ ২০২৪ সালে স্লোভেনিয়ায় অনুষ্ঠিত কনভেনশনের দশম বৈঠকেও অংশ নিয়েছে। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে কনভেনশনে যুক্ত হওয়া এবং এর কার্যকর বাস্তবায়ন নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছেন।

এছাড়া উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশন ও গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তিসহ একাধিক দ্বিপাক্ষিক চুক্তি দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যমান রয়েছে। পাশাপাশি নেপাল, চীন ও ভুটানের সঙ্গেও পানি ব্যবস্থাপনায় সহযোগিতামূলক কাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘জাতিসংঘ পানি কনভেনশনে যুক্ত হওয়া বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। জলবায়ু পরিবর্তন, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও পানির চাহিদা বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতা আরো জরুরি হয়ে উঠেছে। এ কনভেনশন আমাদের অন্তর্ভুক্তিমূলক ও কার্যকর পানি নীতিমালা প্রণয়নে সহায়তা করবে।‘

জাতিসংঘ ইউরোপীয় অর্থনৈতিক কমিশনের (ইউএনইসিই) নির্বাহী সচিব তাতিয়ানা মলসিয়ান বাংলাদেশের যোগদানের প্রশংসা করে বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার জন্য এটি তাৎপর্যপূর্ণ অগ্রগতি। ক্রমবর্ধমান জলবায়ু চাপে আন্তঃসীমান্ত পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনায় এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।’

জাতিসংঘ পানি কনভেনশনের সেক্রেটারি সোনিয়া কোয়েপেল বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানিয়ে অন্য দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোকেও এ কনভেনশনে যোগদানের আহ্বান জানান। তিনি ২০২৬ সালের ২ থেকে ৪ ডিসেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠেয় পরবর্তী জাতিসংঘ পানি কনফারেন্স এর প্রেক্ষাপটে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস দেন।