টেক্সাসে ভয়াবহ বন্যায় মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৫১
টেক্সাসে গত শুক্রবার শুরু হওয়া আকস্মিক বন্যায় অন্তত ৫১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। নিহতদের মধ্যে ১৫ জন শিশু। স্থানীয় সময় ৪ জুলাই ভোররাতে টেক্সাস হিল কান্ট্রি অঞ্চলের নদীর পানি মাত্র দুই ঘণ্টায় ২০ ফুট বেড়ে যায়। এতেই সৃষ্টি হয় বন্যার।

টেক্সাসে গত শুক্রবার শুরু হওয়া আকস্মিক বন্যায় অন্তত ৫১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। নিহতদের মধ্যে ১৫ জন শিশু। স্থানীয় সময় ৪ জুলাই ভোররাতে টেক্সাস হিল কান্ট্রি অঞ্চলের নদীর পানি মাত্র দুই ঘণ্টায় ২০ ফুট বেড়ে যায়। এতেই সৃষ্টি হয় বন্যার।
“গুয়াডালুপ নদী শান্ত, সুন্দর। কিন্তু এমন বৃষ্টির ফলে এটি দানবে রূপ নেয়,” বলেন কারভিল এলাকার স্থানীয় আবহাওয়াবিদ কেরি বারজেস। তিনি জানান, এই এলাকা ‘ফ্ল্যাশ ফ্লাড অ্যালি’ নামেই পরিচিত। এখানে অতীতে বহুবার এমন আকস্মিক বন্যা ঘটলেও এবারের মতো প্রাণহানি হয়নি।
এদিকে, গার্লস সামার ক্যাম্প “ক্যাম্প মিস্টিক”-এর ২৭ কিশোরী এখনো নিখোঁজ রয়েছে। ভারী বর্ষণে গুয়াডালুপ নদী তার বাঁধ ছাপিয়ে গেলে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। নিখোঁজ কিশোরীদের সবাই ক্যাম্প মিস্টিকের শিক্ষার্থী। তাদের উদ্ধারে ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে উদ্ধারকারী দল। এই ক্যাম্পটি ১৯২৬ সালে প্রতিষ্ঠিত একটি বেসরকারি খ্রিস্টান ধর্মভিত্তিক নারী সামার ক্যাম্প। এতে প্রতি বছর প্রায় ৭৫০ জন মেয়ে অংশ নেয়।
“আমরা এখনো অলৌকিক কিছু আশা করছি,” বলেন টেক্সাসের লেফটেন্যান্ট গভর্নর ড্যান প্যাট্রিক। তিনি আরও বলেন, “নদীর স্রোতে ১০-১৫ মাইল ভেসে গিয়েও কেউ কেউ বেঁচে গেছে এমন নজির আছে।”
ক্যাম্প লা জুন্টার এক অভিভাবক জানান, তার ছেলে এবং অন্যরা ক্যাম্পের এক কেবিনে আশ্রয় নেয় এবং সকালে আলো ফুটলে সাঁতরে নিরাপদ স্থানে পৌঁছায়। অন্যদিকে ক্যাম্প মিস্টিকের শিশুদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা নিয়ে এখনো অনিশ্চয়তা রয়েছে।
প্রবল স্রোতের ধাক্কায় গাড়ি গাছের ডালে আটকে গেছে, বাড়িঘর বিধ্বস্ত। রাস্তায় পড়ে আছে খেলনা, কাপড়, এবং ছিন্নভিন্ন আসবাব। “আমি তিনজন পরিচিত মানুষকে হারিয়েছি,” বলেন কারভিলের আবহাওয়াবিদ বারজেস।
‘কেজেন নেভি’ নামের এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের একজন মূখপাত্র বলেন, “আমরা ৬টি রাজ্য থেকে স্বেচ্ছাসেবক পেয়েছি। হেলিকপ্টার, বোট, ড্রোনসহ সব রকম সহায়তা চলছে।”
টেক্সাসের ওয়াইল্ডলাইফ বিভাগ জানিয়েছে, তারা এখন পর্যন্ত ৮৫০ জনকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়েছে, এর মধ্যে ৩০২ জনকে হেলিকপ্টারে উদ্ধার করা হয়েছে।
ক্লাইমেট সেন্ট্রালের বিজ্ঞানী ড. ক্রিস্টিনা ডাল বলেন, “১৯৭০ সাল থেকে এ অঞ্চলে ভারী বর্ষণের পরিমাণ ২০ শতাংশ বেড়েছে।” তিনি সতর্ক করে আরও বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এ ধরনের দুর্যোগের সংখ্যা ও তীব্রতা আরও বাড়বে।”
তথ্যসূত্র: সিএনএন