এনবিসি থেকে বিচ্ছেদের জেরে নাম বদলাবে এমএসএনবিসি
এমএসএনবিসি এ বছর নাম বদলে এমএস নাউ হবে। এটি হচ্ছে এনবিসি থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীনভাবে কাজ করার জন্য। নতুন লোগোতে এনবিসির প্রতীকও থাকবে না।

এনবিসি থেকে কর্পোরেট বিচ্ছেদের অংশ হিসেবে টেলিভিশন সংবাদ নেটওয়ার্ক এমএসএনবিসি তাদের নাম পরিবর্তন করে মাই সোর্স নিউজ ওপিনিয়ন—সংক্ষেপে এমএস নাউ রাখছে।
র্যাচেল ম্যাডো, আরি মেলবার ও নিকোল ওয়ালেসের মতো ব্যক্তিত্বদের নিয়ে কাজ করার মধ্য দিয়ে এই নেটওয়ার্ক উদারপন্থী দর্শকদের কাছে টেনেছে, এখন এনবিসি নিউজ থেকে আলাদা করে নিজস্ব একটি সংবাদ বিভাগ গড়ে তুলছে। এই পরিবর্তনের অংশ হিসেবে এনবিসির প্রতীক ময়ূরও লোগো থেকে সরিয়ে ফেলা হবে। পরিবর্তনটি এ বছরের শেষের দিকে কার্যকর হবে।
এই নাম পরিবর্তনের নির্দেশ দিয়েছে এনবিসি ইউনিভার্সাল; তারা গত নভেম্বর মাসে ইউএসএ, সিএনবিসি , এমএসএনবিসি , ই এন্টারটেইনমেন্ট, অক্সিজেন এবং গলফ চ্যানেল কেবল নেটওয়ার্কগুলোকে আলাদা করে ভার্সান্ট নামে একটি নতুন কোম্পানি গঠন করেছিল। তবে অন্য কোনো নেটওয়ার্ক তাদের নাম পরিবর্তন করছে না।
এমএসএনবিসি নামটি প্রথম গৃহীত হয় ১৯৯৬ সালে, যখন এটি মাইক্রোসফট এবং এনবিসি-এর যৌথ উদ্যোগ হিসেবে শুরু হয়েছিল।
নাম পরিবর্তনের সঙ্গে সবসময় একটি ঝুঁকি জড়িত থাকে। এমএসএনবিসি-এর প্রেসিডেন্ট রেবেকা কুটলার বলেছেন যে কর্মীদের জন্য এই নেটওয়ার্ককে অন্য নামে কল্পনা করা কঠিন। কর্মীদের উদ্দেশে এক স্মারকে তিনি লিখেছেন, 'এটি দ্রুত সিদ্ধান্ত ছিল না এবং উল্লেখযোগ্য আলোচনার বাইরে এটি গ্রহণ করা হয়নি।'
তিনি আরও বলেন,'এই পরিবর্তনের সময়ে এনবিসি ইউনিভার্সাল সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আমাদের ব্র্যান্ডের জন্য একটি নতুন ও স্বতন্ত্র পরিচয় প্রয়োজন। এই সিদ্ধান্ত এখন আমাদেরকে নিজেদের পথ নির্ধারণ করতে এবং স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করতে দেবে, যেহেতু আমরা নিজেদের আধুনিক সংবাদ সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠান তৈরি করে চলেছি।‘
তবে লক্ষ্য করার মতো বিষয় হলো, ব্যবসায়িক চ্যানেল সিএনবিসি তাদের নামে এখনও 'এনবিসি' রেখে দিচ্ছে। এমএসএনবিসি-এর যুক্তি হলো, সিএনবিসি সবসময় বেশি আলাদা থেকে এসেছে এবং তাদের ব্যবসায়কেন্দ্রিক কাভারেজের কারণে অনেক একই বিষয় কাভার করার সম্ভাবনা কম।
তবুও একটি সংবাদ বিভাগ যেখানে নিরপেক্ষভাবে নিরাপদ খেলা খেলার চেষ্টা করে এবং অন্যটি যেখানে নিজের উদারপন্থী অবস্থান আড়াল করে না—এই সম্পর্ক দীর্ঘদিন ধরে টানাপোড়েন সৃষ্টি করেছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই কেবল নেটওয়ার্ককে বিদ্রূপ করে 'এমএসডিএনসি' বলে ডাকেন, যা আসলে ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশানাল কমিটি বোঝায়। কর্পোরেট পরিবর্তনের আগেই এনবিসি নিউজ ধীরে ধীরে তাদের ব্যক্তিত্বদের ব্যবহার এমএসএনবিসি-তে সীমিত করে দিচ্ছিল।
এনবিসি নিউজ-এর কয়েকজন সংবাদব্যক্তিত্ব, যেমন জ্যাকব সোবোরফ, ভন হিলিয়ার্ড, ব্র্যান্ডি জাড্রোজনি এবং অ্যান্টোনিয়া হিল্টন ইতিমধ্যেই এমএসএনবিসি-তে যোগ দিয়েছেন। এছাড়াও নেটওয়ার্কটি ওয়াশিংটন পোস্ট থেকে ক্যারল লিওনিং, ক্যাথরিন র্যাম্পেল, জ্যাকি আলেমানি এবং পলিটিকো থেকে ইউজিন ড্যানিয়েলসকে নিয়োগ দিয়েছে।
সম্প্রতি পিভোট অনুষ্ঠানের এক পর্বে ম্যাডো উল্লেখ করেছেন যে এখন থেকে এমএসএনবিসিকে আর মাঠ পর্যায়ের প্রতিবেদনের জন্য এনবিসি নিউজ-এর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হবে না—অর্থাৎ তাদের আর 'অবশিষ্ট' বা 'ফেলে দেয়া অংশ' পেতে হবে না।
ম্যাডো বলেন, 'এই ক্ষেত্রে আমরা নিজেদের অন্তর্দৃষ্টি, নিজেদের প্রশ্ন এবং নিজেদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে রিপোর্টার ও সংবাদদাতাদের কাছ থেকে যা প্রয়োজন তা সংগ্রহ করতে পারব। আর তাই এটি আরও ভালো হবে।‘
সূত্র: এবিসি-২৭