এনভিডিয়ার এআই চিপ অবৈধভাবে চীনে রপ্তানি, গ্রেপ্তার দুই চীনা নাগরিক

ক্যালিফোর্নিয়ায় দুই চীনা নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মার্কিন বিচার বিভাগ মঙ্গলবার জানিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে এনভিডিয়া এইচ-১০০সহ কয়েক কোটি ডলারের এআই চিপ অবৈধভাবে চীনে পাঠানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।

Aug 8, 2025 - 09:19
এনভিডিয়ার এআই চিপ অবৈধভাবে চীনে রপ্তানি, গ্রেপ্তার দুই চীনা নাগরিক
ছবি: রয়টার্স

ক্যালিফোর্নিয়ায় দুই চীনা নাগরিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মার্কিন বিচার বিভাগ মঙ্গলবার জানিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে এনভিডিয়া এইচ-১০০সহ কয়েক কোটি ডলারের এআই চিপ অবৈধভাবে চীনে পাঠানোর অভিযোগ আনা হয়েছে।

পাসাডেনার চুয়ান গেং (২৮) এবং এল মন্টের শিওয়েই ইয়াং (২৮) ২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য বিভাগের প্রয়োজনীয় লাইসেন্স ছাড়াই উন্নত এনভিডিয়া চিপ অন্যান্য প্রযুক্তি চীনে রপ্তানি করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এই তথ্য বিচার বিভাগের দায়ের করা অভিযোগপত্রের সঙ্গে সংযুক্ত শপথনামায় (অ্যাফিডেভিট) উল্লেখ রয়েছে।

অ্যাফিডেভিট অনুযায়ী, গেং এবং ইয়াং-এর এল মন্টে-ভিত্তিক কোম্পানি এএলএক্স সলিউশনস ২০২২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল; ঠিক তার কিছুদিন পরই যুক্তরাষ্ট্র চীনের সামরিক আধুনিকায়নের গতি কমাতে প্রযুক্তি রপ্তানিতে ব্যাপক নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে এবং এসব চিপ রপ্তানির জন্য লাইসেন্স নেওয়া বাধ্যতামূলক করে। চীন এই মার্কিন পদক্ষেপের বিরোধিতা করে এবং একে স্বাভাবিক বাণিজ্যের ক্ষতি বলে উল্লেখ করে।

বাণিজ্য বিভাগের একজন ফেডারেল এজেন্ট অ্যাফিডেভিটে জানান, এএলএক্স-এর ২০টিরও বেশি চালান সিঙ্গাপুর এবং মালয়েশিয়ার শিপিং ফ্রেইট ফরোয়ার্ডিং কোম্পানিগুলিতে পাঠানো হয়েছিলযেসব দেশ প্রায়ই অবৈধ পণ্যের চীনে পুনঃরপ্তানির (ট্রানশিপমেন্ট) জন্য ব্যবহার হয়।

এজেন্টের ভাষ্যমতে, ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে এএলএক্স একটি চীনভিত্তিক কোম্পানি থেকে ১০ লাখ ডলার পেমেন্ট পেয়েছিল, এছাড়াও হংকং চীনের অন্যান্য কোম্পানি থেকেও অর্থ পেয়েছিলতবে এই পেমেন্টগুলো ফ্রেইট ফরোয়ার্ডিং কোম্পানিগুলো থেকে আসেনি।

এনভিডিয়া এইচ-১০০ হলো উন্নতমানের চিপ, যা বড় ভাষা মডেল (লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল) প্রশিক্ষণসহ বহু ধরনের কাজে ব্যবহার করা যায়।

রেকর্ডে দেখা গেছে, অন্তত ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত এএলএক্স সলিউশনস সান হোসে, ক্যালিফোর্নিয়া-ভিত্তিক সার্ভার নির্মাতা সুপার মাইক্রো কম্পিউটার থেকে দু -এর বেশি এনভিডিয়া এইচ-১০০ চিপ কিনেছিল। কেনার সময় তারা গ্রাহকের অবস্থান সিঙ্গাপুর জাপান হিসেবে ঘোষণা করেছিল।

অ্যাফিডেভিটে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের কোটি ৮৪ লাখ ৫৩ হাজার ৮৫৫ ডলারের একটি ইনভয়েসে এএলএক্স জানিয়েছিল গ্রাহক সিঙ্গাপুরে। কিন্তু সিঙ্গাপুরে নিযুক্ত মার্কিন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা নিশ্চিত করতে পারেননি যে চিপগুলো দেশটিতে পৌঁছেছে, আর প্রদত্ত ঠিকানায় সেই কোম্পানির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এক বিবৃতিতে এনভিডিয়ার এক মুখপাত্র বলেন,'এই মামলা প্রমাণ করে যে চোরাচালান কোনো সমাধান নয়। আমরা মূলত আমাদের পণ্য সুপরিচিত অংশীদারদের কাছে বিক্রি করি... যারা আমাদের সমস্ত বিক্রি যেন মার্কিন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ বিধির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়, তা নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।' মুখপাত্র আরও যোগ করেন, যেসব পণ্য অন্যত্র সরানো হয়, সেগুলোতে 'কোনো সেবা, সহায়তা বা আপডেট দেওয়া হয় না।'

সুপার মাইক্রো এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা 'মার্কিন রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা মেনে চলতে সম্পূর্ণভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ।' তারা চলমান আইনি বিষয়ে মন্তব্য না করলেও ধরনের মামলায় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সহযোগিতা করে থাকে।

বিচার বিভাগ জানিয়েছে, সোমবার গেং এবং ইয়াং লস অ্যাঞ্জেলসের ফেডারেল কোর্টে হাজির হয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী বাসিন্দা গেং লাখ ৫০ হাজার ডলার জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। ইয়াং যিনি ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্রে ছিলেন। তার জামিন শুনানি ১২ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে।

অভিযুক্তদের আইনজীবীরা কোনো মন্তব্য করেননি।

সূত্র: রয়টার্স